লঞ্চের কেবিন থেকে ব্লগার জুলভার্ন ‘নিখোঁজ’

লেখক ও ব্লগার জুলভার্ন দু’দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সদরঘাট থেকে পিরোজপুরগামী একটি লঞ্চে উঠেন হুমায়ূন কবির। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

জুলভার্ন নামে সামহোয়্যারইন ব্লগ ও অন্যান্য ব্লগ সাইটে লেখালেখি করলেও তার আসল নাম হুমায়ূন কবির। রাজধানীর গ্রিনরোডে পরিবার নিয়ে তিনি বসবাস করেন। একইসঙ্গে সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্টের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

ওই ঘটনায় হুমায়ূন কবিরের পরিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ১৯৮২) করেছেন।

হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী মৌসুমী কবির পরিবর্তন ডটকমকে জানান, পিরোজপুরের উদ্দেশে গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গ্রিনরোডের বাসা থেকে সদরঘাট যান হুমায়ূন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় লঞ্চটি ছাড়ার কথা ছিল। রাত ৮টার দিকে ফোনে চেষ্টা করে সেটি বন্ধ পান। এরপর যতবার চেষ্টা করা হয়েছে, মোবাইল ফোন বন্ধই রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে একটি হ্যান্ডব্যাগ, তাতে দুটি প্যান্ট-শার্ট, লুঙ্গি, গামছা, স্লিপার স্যান্ডেল আর ল্যাপটপ ছিল। সে পিরোজপুরগামী পিএস টার্ন নামক লঞ্চের ৭ নম্বর কেবিনের টিকিট কেটেছিল।’

মৌসুমী কবির বলেন, ‘লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায় আমার স্বামী লঞ্চে উঠেছিলেন। ৭ নম্বর কেবিন পছন্দ না হওয়ায় বয়দের ডেকে কেবিন বদলানোর কথা বলেন। পরে তাকে একটি ডাবল কেবিন দেয়া হয়, সেখানে তার পাশের বেডে ইংরেজি ডেইলি স্টার পত্রিকার সাবেক এক সাংবাদিকও ছিলেন। কিন্তু, লঞ্চ ছাড়ার পর টিকিট চেক করতে গিয়ে চেকার আমার স্বামীকে খুঁজে পাননি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার দুই ছেলে লঞ্চে খোঁজ নিতে গেলে দু’জন কেবিন বয় তাদের জানায়— লঞ্চ ছাড়ার আগেই নাকি আমার স্বামীকে ডিবি পরিচয়ে দুই ব্যক্তি নামিয়ে নিয়ে যান।’

এক প্রশ্নের জবাবে হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত একটা মামলার কাজে পিরোজপুর যাচ্ছিল হুমায়ূন। মামলার তারিখ ছিল ৩০ অক্টোবর। কিন্তু, দু’দিন আগে গেছে। কারণ, গ্রামের বাড়ি মঠবাড়িয়া থেকে স্বজনেরা পিরোজপুর আসবেন। সেখানে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘স্বামী আর দুই ছেলে ছাড়া আমার আর কেউ নেই। এ অবস্থায় আমরা খুব অসহায়বোধ করছি। যে করেই হোক, আমি আমার স্বামীর সন্ধান চাই।’

নিখোঁজের ছেলে আহমেদ ইমতিয়াজ শুভ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বাবার কোনো সন্ধান না পেয়ে শনিবার রাতেই আমরা শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ১৯৮২) করেছি। তবে দু’দিনেও তারা বাবার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।’

জিডির তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুধাংশু সরকার পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘জিডির পরপরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। নিখোঁজ হুমায়ূন কবিরের কললিস্ট চেক করেছি। তিনি নিজের মোবাইল ফোন থেকে সর্বশেষ ঘটনার দিন দুপুর দেড়টার দিকে এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন তিনি বাসাতেই ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘এরপর হুমায়ূন কবির আর মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলেননি। তার সর্বশেষ লোকেশন কোথায় ছিল জানার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment